সোমবার বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দুইদিন পর থেকে দেশটিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য উচ্চ আদালতের দুই বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আর তার ফলে এক ধরণের অস্থিরতা বিরাজ করছে বিচারিক অঙ্গনে।
এদিকে, শেখ হাসিনার দেশ থেকে পালানোর পর রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তাদের পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে।
সেইসাথে, প্রধান বিচারপতিসহ আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বেশ কয়েকজন বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী এবং সরকার বিরোধী আইনজীবীরা।
এছাড়া, পুলিশ না থাকায় নিরাপত্তাহীনতা ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের অনুপস্থিতিতে বিচারিক আদালতেও দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।
তবে, গণঅভ্যুত্থানের সময় এ ধরনের অস্থিরতা, অচলাবস্থা তৈরি হওয়া স্বাভাবিক বলে মনে করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের অনেকে।
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করছিল।
সোমবার ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে যোগ দেয় লাখ লাখ মানুষ, তাদের ওই কর্মসূচির মুখে এক পর্যায়ে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা।
আদালত বর্জন করবেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
সহিংসতার ঘটনার তদন্ত সরকার নিজেই করতে চাইছে কেন?
'কার কাছে বিচার চাইব? আল্লাহর কাছে বিচার দিছি'
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ সুপ্রিম কোর্টের বিচারিক কার্যক্রম
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তৈরি হওয়া অস্থিরতার প্রভাব পড়ে বিচারিক অঙ্গনেও।
সোমবারই সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন দফায় দফায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সুপ্রিম কোর্টসহ ঢাকার নিম্ন আদালতের কার্যক্রম চলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানায়।
সেদিন সকাল সাড়ে দশটায় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মঙ্গলবার থেকে স্বাভাবিক নিয়মে নিম্ন আদালতে বিচারিকসহ সব ধরনের কার্যক্রম চলবে। একই সাথে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারিক ও দাপ্তরিক সব কাজ কর্ম চলবে।
যদিও এক ঘন্টার ব্যবধানে আবারও জানানো হয় উচ্চ আদালতের বিচারিক কার্যক্রম চলবে না কিন্তু সীমিত পরিসরে অফিস চলবে।
পর দিন মঙ্গলবার আবার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানায় বুধবার ও বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালতের কোন বিচারিক কার্যক্রম চলবে না। তবে নিম্ন আদালত খোলা থাকবে।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসি বাংলাকে বলেন, “সীমিত পরিসরে অফিস চলার কথা কিন্তু বেশিরভাগ স্টাফ নিরাপত্তা-জনিত কারণে না আসায় সেভাবে কাজ হয় নি। দুপুর দুইটার আগেই অফিস থেকে বাসায় ফিরেছি।”
ওই দিন দুপুর দেড়টায় জানানো হয়, বৃহস্পতিবার থেকে সীমিত পরিসরে সরাসরি অথবা ভার্চুয়ালি হাইকোর্ট বিভাগের বিচার কার্যক্রম চলবে।
তবে, বিজ্ঞপ্তিতে চেম্বার জজ আদালতের কার্যক্রম বৃহস্পতিবার চলবে বলে জানালেও আপিল বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ থাকার কথা বলা হয়।
কিন্তু আবার রাত সাড়ে ১০টায় দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে দুপুরে দেয়া সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানায় অনির্দিষ্টকালের জন্য উভয় বিভাগের সকল ধরনের বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
এতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আপিল বিভাগ এবং হাইকোর্ট বিভাগের কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সাথে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
সারাদেশে পুলিশের ওপর হামলা ও নিহতের ঘটনার পর থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্বাভাবিক সময়ের মতো নিরাপত্তার জন্য কোন পুলিশ সদস্য নেই গত কয়েকদিন ধরেই।
এর মধ্যে ভাঙচুর হয় আদালত চত্বরেও। বুধবার লেডি জাস্টিস নামে একটি ভাস্কর্য ভাঙচুরের পর উপড়ে ফেলা হয়।
তবে, বৃহস্পতিবার অল্প কিছু সংখ্যক আনসার সদস্যদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত দেখা যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, “স্বাভাবিক সময়ের মতো অফিসের কার্যক্রম চলছে। বিভিন্ন মামলার টুকটাক এফিডেভিডের কাজ শুরু হয়েছে। আমরা জাজেজ কোয়ার্টারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি”।
“ আদালত অঙ্গনে পুলিশ নেই, কিন্তু আনসার সদস্যরা রয়েছে” বলে জানান মি. রহমান।
কারফিউ জারি হলো কেন, সহিংসতা ঠেকাতে এটাই কি শেষ সমাধান?
চব্বিশ ঘণ্টার বেশি সময় সরকারহীন বাংলাদেশ, পুলিশ ও প্রশাসনে অচলাবস্থা
পালিয়ে যাবার আগে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার শেষ কয়েক ঘণ্টা কেমন ছিল?
বিচারপতিদের পদত্যাগ দাবি আন্দোলনকারীদের
বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিদের অপসারণে দাবি জানানো হয়েছে।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ এক বার্তায় বলেছেন, “অভ্যুত্থানের আগে আমাদের যেভাবে আদালতের নামে টালবাহানা করা হত, ঠিক একই কায়দায় অভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্র-জনতার সরকার ব্যাহত করার প্রচেষ্টা চলমান।”
মি. মাহমুদ তার ভাষায় 'বিচার বিভাগের ফ্যাসিবাদ' বিলোপের দাবি জানিয়ে বলেন, “আমরা অচিরেই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার সক্রিয় শরিক প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের বিচারপতিবৃন্দের অপসারণ দাবি করছি”।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কারে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান মন্তব্য করেছিলেন, “ রাজপথে আন্দোলন করে কি কোর্টের রায় পরিবর্তন করা যায়?”
এ মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়।
একইসাথে মি. মাহমুদ অনতিবিলম্বে শূন্য পদগুলোতে বিচারপতি নিয়োগের দাবি করেছেন।
এছাড়াও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি বিচার বিভাগকে স্বাধীন ও কার্যকরভাবে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় পলিসি বাস্তবায়ন করার আহবান করা হয়েছে ওই বার্তায়।
প্রধান বিচারপতিসহ 'দলবাজ বিচারপতিদের' পদত্যাগ দাবি বার অ্যাসোসিয়েশনের
রোববারের মধ্যে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিতর্কিত বিচারপতিদের অপসারণের আল্টিমেটাম দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
একই সাথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন তিনি।
রোববার থেকে সুপ্রিম কোর্টের দুই বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানান তিনি।
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে 'দেশ ছাড়া করা ও তার প্রতি যারা অবিচার' করেছেন তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান মি. উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় আইনজীবী সমিতি একটি সংবাদ সম্মেলন করে।
এ সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে বিচার বিভাগকে 'আওয়ামী লীগের বিচার বিভাগ' বলে অভিহিত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আইনজীবী মামুন মাহবুব গত ১৫ বছরে যারা প্রধান বিচারপতি ছিলেন তাদের কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচার করার দাবি জানিয়েছেন।
এই প্রধান বিচারপতিদের মধ্যে এ বি এম খায়রুল হক, মো. মোজাম্মেল হোসেন, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
আদালতের প্রথা অনুসরণ করে জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের মধ্য থেকে আপিল বিভাগে সাতজন বিচারপতি নিয়োগের দাবিও জানানো হয়েছে এ সংবাদ সম্মেলনে।
একইসাথে হাইকোর্ট বিভাগের ৫০ জন বিচারপতির পদত্যাগও দাবি করেছেন বিএনপিপন্থী এই আইনজীবীরা।
বিক্ষোভকারীদের গুলি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো কী করতে পারে?
মাথায় গুলি লেগে যেভাবে লুটিয়ে পড়েছিল মুগ্ধ, প্রিয় ও রিয়াদ
কীভাবে একজন স্বৈরশাসককে ক্ষমতা থেকে সরানো যায়
রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তাদের পদত্যাগের হিড়িক
বাংলাদেশে সাধারণত দলীয় রাজনৈতিক পরিচয়েই রাষ্ট্রীয় আইন কর্মকর্তা বা অ্যাটর্নি জেনারেলদের নিয়োগ দেয়া হয়। ফলে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ থেকে পালানোর পরই রাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তাদের পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে।
বুধবার রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা এ এম আমিন উদ্দিন পদত্যাগ করেছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে দেয়া পদত্যাগপত্রে ব্যক্তিগত কারণ দেখানো হয়েছে।
এরই মধ্যে বাকি তিন জন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ও পদত্যাগ করেছেন রাষ্ট্রীয় মামলা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে।
বৃহস্পতিবার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন আরো তিনজন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল।
এছাড়া অন্যান্য আইন কর্মকর্তাদের মধ্যেও উদ্বেগ রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলদেরও অনেকে পদত্যাগ করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে আদালত অঙ্গনে।
এরই মধ্যে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ
বৃহস্পতিবার নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামানকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
আইন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৬৪(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এই নিয়োগ দিয়েছেন।
মো. আসাদুজ্জামান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক।
অতীতে বিভিন্ন সময় বিএনপির পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মহলে যেসব মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয় তুলে ধরা হতো, সেখানে তাকে ভূমিকা রাখতে দেখা গেছে।
বিবিসি বাংলাকে নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “আজকেই অ্যাটর্নি কার্যালয়ে জয়েন করবো।”
বিচারিক আদালতে স্থবিরতা
নিরাপত্তাহীনতা ও রাষ্ট্রপক্ষের অনুপস্থিতিতে এক ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে বিচারিক আদালতে।
আইনজীবীরা জানান, ঢাকার বিচারিক আদালতে শুধুমাত্র আসামিদের জামিন এবং জরুরি আবেদনের শুনানি হচ্ছে। এসব মামলায় রাষ্ট্র-পক্ষ এবং পুলিশ প্রসিকিউশনের কেউই উপস্থিত থাকছেন না।
এই মূহুর্তে ঢাকার বিচারিক আদালতগুলোতে নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় বিভিন্ন মামলায় সাক্ষ্যগ্রহন, আসামিদের হাজির করা এবং নিয়মিত শুনানি হচ্ছে না।
শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর সোমবারই রাষ্ট্রপতির সাথে বৈঠক করে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল।
ওই বৈঠকে সব রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি এবং কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুক্তির সিদ্ধান্ত হয়।
পরদিন মঙ্গলবার একদিনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী এবং কোটা আন্দোলনের শিক্ষার্থীসহ দুই হাজার দুইশো মানুষকে জামিন দেয় ঢাকার তিনটি সিএমএম কোর্ট।
তবে, গত দুই দিনে যেসব মামলায় জামিন হয়েছে কোন আদালতেই ছিলেন না রাষ্ট্র-পক্ষের আইনজীবীরা।
এসব মামলায় পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের পক্ষ থেকে কোন বিরোধিতাও করা হয় নি।
আইনজীবী খাদিমুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, “সীমিত পরিসরে আদালত চলছে। মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে শুধু (সিএমএম) জামিন এবং জরুরি আবেদনের শুনানি হচ্ছে।”
এছাড়া মহানগর দায়রা জজ আদালত, নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল, অন্যান্য স্পেশাল ট্রাইব্যুনালগুলোসহ বেশিরভাগ আদালতের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
আইনজীবীরা জানান, আদালত চত্বরে সাধারণত নিরাপত্তার জন্য পুলিশ মোতায়েন থাকে। কিন্তু এখন পুলিশ না থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় বেশিরভাগ আদালতেরই কার্যক্রম হয় নি।
কারণ এসব আদালতে সাক্ষ্য-গ্রহণ, আসামীদের হাজিরা ও নিয়মিত শুনানি হয়। কিন্তু যেহেতু পুলিশ কোন আসামি হাজির করতে পারে নি তাই এসব আদালতের নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রম হয় নি বৃহস্পতিবারও।
মি. ইসলাম বলেন, “ যেহেতু আসামিদের উপস্থিতিতে বিচার হয় সুতরাং কারাগার থেকে আসামি না আসলে সাক্ষ্য গ্রহণ হয় না। তবে, জামিন বা জরুরী পিটিশন নিষ্পত্তির জন্য শুধু অল্প সময়ের জন্য কোর্টগুলো বসে। আর ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টগুলো সাধারণত দুপুরে বেইলের জন্য বসছে আজকে পর্যন্ত।”
শুধুমাত্র পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে দিচ্ছে বিচারিক আদালতগুলো।
এছাড়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে এডিএম আদালতগুলোর কার্যক্রমও পুরোপুরি বন্ধ ছিল বৃহস্পতিবার।
আওয়ামীপন্থী কোন আইনজীবীকে এ দিন বিচারিক আদালতে দেখা যায় নি বলে জানান আইনজীবীরা।
এছাড়া আদালতের নিরাপত্তায় পুলিশ ও আনসার না থাকলেও সেনাবাহিনীর সদস্যদের সিএমএম কোর্টের সামনে টহল দিতে দেখা যায় বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
এ অবস্থা কি বিরল?
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহদীন মালিক মনে করেন, বিশ্বের সব দেশেই এ ধরনের গণঅভ্যুত্থানের সময় শূন্যতা তৈরি হয়। এক ধরনের অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়, এটা স্বাভাবিক।
“পুলিশ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এক ধরনের শূন্যতা রয়েছে। এটা স্বাভাবিক। দুনিয়ার অনেক দেশে এটা হয়েছে। প্রফেসর ইউনুস যেহেতু চলে এসেছেন। উনি নিশ্চয়ই এই ব্যাপারগুলো এড্রেস করবেন। এক – দুই দিনের মধ্যে এটা ঠিক হয়ে যাবে”।
মি. মালিক বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ নিম্ন আদালত ও উচ্চ আদালত পুলিশ ছাড়া অচল। পুলিশ কাজে ফিরে আসলেই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আমি নিশ্চিত দুই-একদিনের মধ্যেই এর সুরাহা হয়ে যাবে”।